সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ; United Nations

Ad Code

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ; United Nations

 

The University of Burdwan

B.A.  4th Semester

Political Science (Honours)

CC-10; International Organizations

দ্বিতীয় অধ্যায়

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ

প্রশ্ন-১; সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত টিকা লেখ
অথবা
প্রশ্ন-২; সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ/ রাষ্ট্রসংঘের উৎপত্তি ব্যাখ্যা করো। (১০/১৯)
অথবা
প্রশ্ন-৩; সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও নীতি ব্যাখ্যা করো(১০/১৯, ৫/২২)
অথবা
প্রশ্ন-৪; সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কার্যাবলী সম্পর্কে একটি টিকা লেখ
অথবা
প্রশ্ন-৫; সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের দুর্বলতাগুলি উল্লেখ করো
অথবা
প্রশ্ন-৬; আন্তর্জাতিক সংগঠন হিসাবে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ভূমিকা বা গুরুত্ব আলোচনা করো
উত্তরঃভূমিকাঃ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ পরিণতির পর বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। কিন্তু চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যর্থতার কারণে মাত্র কুড়ি বছরের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি বিলুপ্ত হয় এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের থেকেও এই বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলা ছিল আরও ভয়ংকর। ফলে বিশ্বজুড়ে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রয়োজন অপরিহার্য্য হয়ে পড়ে

স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি WhatsApp  করো 

8101736209 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়

উৎপত্তিঃ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রভৃতি দেশগুলির উদ্যোগে গড়ে ওঠে আন্তর্জাতিক সংগঠন সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বা রাষ্ট্রসংঘ। নীচে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উৎপত্তির ইতিহাস আলোচনা করা হল-

) লন্ডন ঘোষণাপত্রঃ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন ভয়ংকর ও অপ্রতিহত বেগে এগিয়ে চলেছে সেইসময়ই ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রভৃতি কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা লন্ডনে মিলিত হয়ে বিশ্বশান্তির জন্য একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গঠনের ব্যাপারে ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেন। এটিই 'লন্ডন ঘোষণাপত্র' নামে পরিচিত।

) আটলান্টিক সনদঃ

লন্ডন ঘোষণার কয়েকদিন পরে নিউফাউন্ডল্যান্ডের কাছে আটলান্টিক মহাসাগরের উপর 'প্রিন্স অব ওয়েলস' এবং 'আগাস্টা' নামক দুটি যুদ্ধজাহাজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেন্ট ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল এক গোপন বৈঠকে মিলিত হন। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৯ আগস্ট তাঁরা আলোচনা শেষে যে সনদে স্বাক্ষর কেন সেটিই 'আটলান্টিক সনদ' নামে পরিচিতি পায়।

) ওয়াশিংটন সম্মেলনঃ

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার ওয়াশিংটন শহরে বিশ্বের ২৬টি দেশের প্রতিনিধিরা এক বৈঠকে মিলিত হয়ে আটলান্টিক সনদের নীতিগুলি নিয়ে আলোচনা করেন। দীর্ঘ আলোচনার পর আটলান্টিক সনদের শর্তগুলিকে গ্রহণ করে একটি দলিল প্রস্তুত করা হয় এবং তাতে প্রতিনিধিরা স্বাক্ষর করেন। এটিই সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ঘোষণাপত্র নামে পরিচিত।

) মস্কো ঘোষণাঃ

১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৩০ অক্টোবর সোভিয়েত ইউনিয়নের মস্কো শহরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটেন ও চিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক বৈঠকে মিলিত হয়ে আলোচনার পর একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেন। এই ঘোষণাপত্রে বিশ্বশান্তির লক্ষ্যে একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়

) তেহেরান ঘোষণাঃ

১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে তেহরানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড,সোভিয়েত, ইউনিয়নের প্রধানরা মিলিত হন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট, ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, চার্চিল এবং রুশ প্রধান স্তালিন বৈঠক শেষে একটি সম্মিলিত ঘোষণায় স্থায়ী বিশ্বশান্তির জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কথা বলেন।

) ডাম্বারটন ওকস সম্মেলনঃ

১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার ডাম্বারটন ওক নামক স্থানে বিশ্বের কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা মিলিত হয়ে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের গঠনকাঠামো সম্পর্কে আলোচনা করেন। 'ভেটো' প্রয়োগ নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে পরবর্তী সম্মেলনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা স্থির হয়

) ইয়াল্টা সম্মেলনঃ

১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে ক্রিমিয়ার ইয়াল্টা শহরে রুজভেল্ট, চার্চিল ও স্তালিন এক বৈঠকে মিলিত হন, যা 'ইয়াল্টা সম্মেলন' নামে পরিচিতি পায়। এই সম্মেলনে পূর্ববর্তী সম্মেলনের 'ভেটো' প্রদানের মতপার্থক্যের নিরসন ঘটে

) সানফ্রান্সিসকো সম্মেলনঃ

ইয়াল্টা সম্মেলনেই স্থির হয়েছিল জাতিপুঞ্জের সনদ রচিত হবে সানফ্রান্সিসকো সম্মেলনে। সেইমতো ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত দীর্ঘ সময়জুড়ে আমেরিকার সানফ্রান্সিসকোতে ৫০টি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য, নীতি ও গঠনকাঠামোর সামগ্রিক রূপরেখা এই সম্মেলনেই স্থিরীকৃত হয়। সম্মেলনের শেষ দিন ২৬ জুন ৫১টি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদে স্বাক্ষর করেন। এবং ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২৪ অক্টোবর সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়।

স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি WhatsApp  করো 

8101736209 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়

রাষ্ট্রসংঘের উদ্দেশ্য ও নীতিসমূহঃ

রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে যে, প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলার ফলে বিশ্বমানবের সামনে যে ভয়াবহ বিভীষিকা নেমে এসেছে, তা থেকে ভবিষ্যৎপ্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য এবং ভাবীকালের মানুষকে যুদ্ধের অভিশাপ থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যেই সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সৃষ্টি হয়েছে। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদের ১ নং ধারায় চারটি উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়েছে। এগুলি হল-

১) আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা এবং কোনোরকম শাস্তিভঙ্গের কারণ দেখা দিলে বা আগ্রাসনের সম্ভাবনা দেখা দিলে সম্মিলিতভাবে তার প্রতিরোধ করা। সমস্ত সদস্যরাষ্ট্রকে এ ব্যাপারে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে। এ ছাড়া ন্যায়নীতি ও আন্তর্জাতিক বিবাদের সমাধান করাও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কর্তব্য

২) বিশ্বের প্রতিটি মানুষের সমানাধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া এবং দেশে-দেশে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলে বিশ্বশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি করাও রাষ্ট্রসংঘের অন্যতম উদ্দেশ্য।

৩) সব রাষ্ট্রই এমন নীতি অনুসরণ করবে যাতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ের সমস্যাগুলির পাশাপাশি মানবিক সংকটগুলিও নিঃসন করা যায়। জাতি-ধর্ম- ভাষা নির্বিশেষে বিশ্বমানবের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য সকল রাষ্ট্রই পারস্পরিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে

৪) উল্লিখিত উদ্দেশ্যগুলিকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য রাষ্ট্রসংঘ হয়ে উঠবে সমস্ত রাষ্ট্রের কেন্দ্রভূমি এবং রাষ্ট্রসংঘ সকল সদস্যরাষ্ট্রের কার্যাবলীর মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে।

স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি WhatsApp  করো 

8101736209 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নীতিসমূহঃ

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্যগুলি বাস্তবায়িত করার জন্য সনদের ২ নং ধারায় সাতটি নীতির কথা বলা হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের সদস্যরাষ্ট্রগুলি এই নীতিগুলি অনুসরণ করে চলতে অঙ্গীকারবদ্ধ। নীতিগুলি হল-

১) রাষ্ট্রসংঘের সকল সদস্যরাষ্ট্রই সার্বভৌমত্বের মানদণ্ডে সমান ও সমমর্যদা সম্পন্ন

২) সকল সদস্যরাষ্ট্রই সমানাধিকার ও একই সুযোগসুবিধা ভোগ করার অধিকার পাবে এবং এই অধিকার সুরক্ষিত করতে সনদে উল্লিখিত দায়িত্বগুলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে

৩) সকল সদস্যরাষ্ট্রকেই যে-কোনো আন্তর্জাতিক বিবাদ এমনভাবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে

মীমাংসা করতে হবে, যাতে আন্তর্জাতিক শাস্তি, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার ক্ষুন্ন না হয়।

৪) আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সকল সদস্যরাষ্ট্রই পারস্পরিক ভৌগোলিক অখণ্ডতা

ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার পরিপন্থী কোনোপ্রকার বলপ্রয়োগ বা বলপ্রয়োগের ভীতিপ্রদর্শন থেকে বিরত থাকবে

৫) রাষ্ট্রসংঘের সনদে উল্লিখিত উদ্দেশ্যগুলিকে সফল করার জন্য সকল সদস্যরাষ্ট্রকে রাষ্ট্রসংঘের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। রাষ্ট্রসংঘের যদি কোনো 'অপরাধী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনোরকম শাস্তিমূলক বা নিবারণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তবে সেই রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য কোনো সদস্যরাষ্ট্র সহযোগিতা করবেনা, অর্থাৎ কোনো রাষ্ট্র যেন দ্বিমুখী আচরণ না করে

৬) আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে রাষ্ট্রসংঘের সদস্য নয়, এমন রাষ্ট্রগুলিও যাতে রাষ্ট্রসংঘের নীতি মেনে চলে তার দিকেও রাষ্ট্রসংঘ লক্ষ রাখবে 

৭) কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। অবশ্য সনদে এও বলা আছে যে, যদি কোনো এক বা একাধিক রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার আন্তর্জাতিক শান্তিবিঘ্নের কারণ হয় তখন রাষ্ট্রসংঘ সেক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হবে

স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি WhatsApp  করো 

8101736209 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কার্যাবলী/সাফল্যঃ

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বিভিন্ন কার্যাবলী সম্পাদনের মাধ্যমে প্রভূত সাফল্য লাভ করেছে। নীচে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বিভিন্ন কার্যাবলী বা সাফল্য আলোচনা করা হল-

১) বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষাঃ

প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে পরবর্তীকালে দীর্ঘ কয়েক দশকে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ইতিবাচক ভূমিকা পালনে সক্ষম হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া ও প্যালেস্তাইন যুদ্ধ, সুয়েজ সংকট, ভারত-পাক যুদ্ধ, আরব-ইজরায়েল যুদ্ধ, দীর্ঘকালীন ইরাক-ইরান যুদ্ধ, উপসাগরীয় যুদ্ধ প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সমস্যা-সংকটে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শাস্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নকারী শক্তিগুলির বিরুদ্ধে বিশ্বজনমত গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে জাতিপুঞ্জ

২) নিরস্ত্রীকরণ ও আণবিক অস্ত্রপ্রসার প্রতিরোধঃ

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জই প্রথম যুদ্ধে আণবিক অস্ত্রের প্রয়োগ প্রতিরোধ করার কথা ঘোষণা করে। ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক প্রস্তাব গ্রহণ করে নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ সভা। এরপর ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে আণবিক অস্ত্রের ব্যবহারকে 'মানবসভ্যতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ' হিসাবে প্রস্তাব গৃহীত হয়। এইভাবে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ একের পর এক বিভিন্ন চুক্তি, কমিশন গঠন ও প্রস্তাব গ্রহণ করে আণবিক অস্ত্রপ্রসার প্রতিরোধে সচেষ্ট থেকেছে। যেমন নিরস্ত্রীকরণ কমিশন (১৯৫২), পারমাণবিক অস্ত্রপ্রসার প্রতিরোধ চুক্তি (১৯৬৮), পূর্ণাঙ্গ আণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তি (১৯৮৭) প্রভৃতি

৩) ঔপনিবেশিক তার অবসানঃ

জাতিপুঞ্জের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল ঔপনিবেশিকতার অবসান ঘটানো। এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার বহু দেশের উপর থেকে ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে স্বায়ত্তশাসন প্রদানের ব্যাপারে জাতিপুঞ্জ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল।

৪) মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রয়াসঃ

বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১০ ডিসেম্বর সাধারণ সভা 'মানবাধিকার সংক্রান্ত বিশ্ব ঘোষণাপত্র' প্রকাশ করে। প্রসঙ্গত, পরবর্তীকালে এই দিনটিই বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসাবে পালিত হয়। এই ঘোষণাপত্রের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

৫) অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নঃ

জাতিপুঞ্জের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ বিশ্বের সামগ্রিক আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য বেশকিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া বিজ্ঞানচর্চা, শিক্ষাপ্রসার, দুরারোগ্য রোগ নিরাময়, মহামারি নিরসন কর্মসূচি প্রভৃতির মাধ্যমে বিশ্বের সাংস্কৃতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে

স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি WhatsApp  করো 

8101736209 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ব্যার্থতা বা দুর্বলতাঃ

সাফল্যের পাশাপাশি জাতিপুরের ব্যর্থতার পরিসংখ্যানও কোনো অংশে কম নয়। নীচে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বিভিন্ন ব্যার্থতা বা দুর্বলতা আলোচনা করা হল-

১) বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় ব্যর্থতাঃ

জাতিপুঞ্জের দীর্ঘ কয়েক দশকের কার্যক্রমে বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণরূপে যুদ্ধের ভীতি রক্ষা করা যায়নি, সুনিশ্চিত হয়নি নিরাপত্তার ক্ষেত্রটিও। কতিপয় বৃহৎ শক্তির আস্ফালন এবং বিশ্বসন্ত্রাসের পটভূমি বিচার করলে জাতিপুঞ্জের ব্যর্থতাই প্রকটিত হয়।

২) নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে ব্যর্থতাঃ

বিশ্বকে সামগ্রিকভাবে অস্ত্রহীন করার ক্ষেত্রে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ। তাছাড়া আণবিক অস্ত্রপ্রসার প্রতিরোধ কর্মসূচি, চুক্তি ও কমিশন গঠন করেও বিশ্বমানবের সামনে থেকে আণবিক শক্তিপ্রয়োগের ভয়াবহ পরিণতির আশঙ্কা আজও দূরীভূত করতে পারেনি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ

৩) মানবাধিকারের প্রশ্নে ব্যর্থতাঃ

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিশ্বঘোষণাপত্র বিষয়টি যতই তাৎপর্যপূর্ণ হোক, তার ফলাফল বিচার করলে ব্যর্থতার দিকটিই প্রকাশিত হয়। আজও বর্ণবৈষম্য, নারীর অমর্যদা, শিশুশ্রমিকদের যন্ত্রণা প্রভৃতি সেই ঘোষণাপত্রের অসাতাই প্রমাণ করে।

৪) বৃহৎ শক্তির আস্ফালন প্রতিরোধে ব্যর্থতাঃ

বিশ্বের কতিপয় বৃহৎ শক্তির ক্ষমতার দম্ভ ও আস্ফালন বিশ্বমানবের সামনে আতঙ্কের পরিবেশ রচনা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগী দেশগুলির অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদী ভূমিকা এবং গণতন্ত্র ও সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের ক্ষেত্রে জাতিপুঞ্জ তেমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। সমালোচকেরা একে 'পক্ষপাতিত্ব' বলে সমালোচনা করেছেন।

৫) সাংগঠনিক দুর্বলতাঃ

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সাংগঠনিক দুর্বলতা নানা ক্ষেত্রে প্রকট হয়ে পড়েছে। যুদ্ধবিভীষিকা প্রতিরোধ করা, আণবিক অস্ত্রপ্রসার রোধ প্রভৃতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচারালয়ের শাস্তি প্রদানের ক্ষমতাহীনতা এই সংস্থার সাংগঠনিক  দুর্বলতাই প্রকাশ করে। তা ছাড়া পাঁচ রাষ্ট্রশক্তির 'ভেটো' ক্ষমতা বহু ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ফললাভে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মূল্যায়নঃ

উপরিউক্ত ব্যার্থতা থাকা সত্ত্বেও একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন হিসাবে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের গুরুত্বকে কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায়না। কারন প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকে পরবর্তীকালে দীর্ঘ কয়েক দশকে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ইতিবাচক ভূমিকা পালনে সক্ষম হয়েছে


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code