ব্রিটিশ সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা

Ad Code

ব্রিটিশ সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা

University of Burdwan
3rd Semester (Honours)
Political Science

CC-5; Comparative Politics


ব্রিটিশ সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা

প্রশ্ন-) ব্রিটিশ সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো। ১০(২০২২)
অথবা
প্রশ্ন-) সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো। (২০২২)
অথবা
প্রশ্ন-) ব্রিটিশ সংসদীয় শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো। (২০১৮)
উত্তরঃ

 ব্রিটিশ সংসদীয় শাসন ব্যবস্থাঃ

বর্তমান বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ব্রিটেন এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ব্রিটেনে মন্ত্রীপরিষদ শাসিত সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। এছাড়াও রয়েছে স্বতন্ত্র আইন, শাসন বিচার বিভাগ। নীচে ব্রিটেনের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার কিছু গুরুত্ব পূর্ণ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হল-

১) অলিখিত সংবিধানঃ

ব্রিটেনের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় মূলতঃ অলিখিত এবং সুপরিবর্তনীয় সংবিধানের অস্তিত্ব দেখা যায়। এটি মূলতঃ প্রথা, আচার, ঐতিহ্য এবং অংশত লিখিত দলিল হতে উদ্ভূত।

) রাষ্ট্র এবং সরকার প্রধানঃ

ব্রিটেনে রাজা হলেন নিয়মতান্ত্রিক প্রধান। তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং আমৃত্যু স্বপদে বহাল থাকেন। তিনি ব্রিটেনের রাষ্ট্র প্রধান, সরকার প্রধান নন।

) দায়িত্বশীলতাঃ

     ব্রিটেনে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। কাজেই সরকার দায়িত্বশীল সরকার। এখানে শাসন বিভাগ আইন বিভাগের নিকট তার কার্যকলাপের জন্য দায়ী থাকে। আইন সভার আস্থার উপর নির্ভর করে শাসন বিভাগ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকে। আইন সভার আস্থা হারালে মন্ত্রীগণকে যৌথভাবে পদত্যাগ করতে হয়। একে "মন্ত্রীগণের দায়িত্বশীলতা" বলা হয়।

) ক্ষমতার বণ্টনঃ

ক্ষমতা বন্টন নীতির উপর ভিত্তি করে তুলনা করলে দেখা যায় যে, ব্রিটেনের সরকার ব্যবস্থা এককেন্দ্রিক। ব্রিটেনে সরকারের সকল ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে আঞ্চলিক সরকারের উপস্থিতি দেখা গেলেও তাদের তেমন স্বাধীনতা বা স্বতন্ত্রতা থাকেনা।

) ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণঃ

    ব্রিটেনে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। অর্থাৎ ব্রিটেনে সরকারের তিনটি বিভাগ স্বাধীন স্বতন্ত্রভাবে কাজ করার অধিকার ভোগ করে। যদিও ব্রিটেনের ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মত অতটা কড়াকড়িভাবে মেনে চলা হয়না।

৬) আইনসভাঃ

ব্রিটেনের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় আইনসভা দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট। আইনসভার এই দুটি কক্ষ হল- উচ্চ কক্ষ নিম্ন কক্ষ। ব্রিটেনে আইন সভার উচ্চ কক্ষ হচ্ছে হাউজ অব লর্ডস্ এটি বৃহৎ তবে তুলনামূলকভাবে ক্ষমতাহীন কক্ষ। ব্রিটেনে আইন সভার নিম্ন কক্ষের নাম 'কমন্স সভা' এর সদস্য সংখ্যা ৬৩০ এবং তাঁরা পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন।

) আইন প্রণয়নঃ

ব্রিটেনের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় মন্ত্রীগণ কর্তৃক বিলগুলো আইন সভায় উত্থাপিত হয় এবং তা পাশের ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত থাকেন। ব্রিটেনে বিলগুলোর খুঁটিনাটি পরীক্ষার পর তা কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। আইনসভায় বিল পাশের পর তা

সম্মতির জন্য রাজা বা রানীর কাছে কাঠানো হয় এবং রাজা বা রানীর সমর্থন লাভ করলে তা আইনে পরিনত হয়।

) বিচার বিভাগঃ

ব্রিটেনের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় পার্লামেন্টের একচ্ছত্র প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিচারবিভাগ ক্ষমতাগত দিক থেকে কিছুটা দুর্বল। এখানে আইন প্রণয়ন কিংবা তা বাতিলের একচ্ছত্র ক্ষমতা আইন সভার। এমন কি আইন সভা আদালত বা বিচার বিভাগের সিদ্ধান্তকেও বাতিল করে দিতে পারে।

) দলীয় ব্যবস্থাঃ

ব্রিটেনের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় দ্বি-দলীয় ব্যবস্থার সুদীর্ঘ ঐতিহ্য বিদ্যমান। দেশের সংবিধানে দলীয় ব্যবস্থার উল্লেখ না থাকলেও ব্রিটেনে রাজনৈতিক দলগুলো শাসন ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অন্যান্য সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চেয়ে ব্রিটেনের রাজনৈতিক দলগুলো অনেক বেশী সংগঠিত সুশৃঙ্খল।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code