পণপ্রথা নিষিদ্ধকরণ আইন, dowry prohibition act

Ad Code

পণপ্রথা নিষিদ্ধকরণ আইন, dowry prohibition act


পণপ্রথা নিষিদ্ধকরণ আইন

ভূমিকাঃ

পণপ্রথা একটি দীর্ঘদিনের কুপ্রথা। এই প্রথার জেরেই মহিলারা স্বামীর গৃহে নির্যাতিতা হন। পণপ্রথা নিষিদ্ধ করতে ১৯৬১ সালে তৈরি হয় পণপ্রথা নিষিদ্ধকরণ আইন। এই আইনে ফাঁকফোকর থাকায় সমাজের বিশেষ উপকার হয়নি, বরং সময়ের সঙ্গে পণের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর এর সঙ্গে বেড়েছে বধূ নির্যাতন, আত্মহত্য‌া, খুনের মতো ঘটনা। এই সমস্ত বিষয় বিচার বিবেচনা করে বিভিন্ন দফায় এই আইন সংশোধন করে ১৯৮৬ সালে নতুন রূপ দেওয়া হয়।

পণ দেওয়া নেওয়ার শাস্তিঃ

পণ দেওয়া বা নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত উভয় পক্ষেরই শাস্তির বিধান আছে। এই কাজে সরাসরি যুক্ত থাকা বা লেনদেনে সাহায্য‌ করার জন্য‌ কমপক্ষে ৫ বছর জেল এবং জরিমানা, আবার কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা অথবা পণের মূল্য‌, দুইয়ের মধ্য‌ে যেটি বেশি, সেই সাজা হবে। কিন্তু কোনও রকম জোরজবরদস্তি ছাড়া যদি বর/কনেকে উপহার দেওয়া হয় তবে তা হলে কোনও অপরাধের ঘটনা ঘটে না। তবে সব উপহারের লিখিত তালিকা অবশ্য‌ই রাখতে হবে। প্রচলিত রীতি বা আর্থিক সামর্থ্য‌ অনুযায়ী উপহার দিলে বা নিলে কোনও শাস্তির বিধান নেই।

দাবি করার শাস্তিঃ

সোজাসুজি বা ঘুরপথে পণের দাবি করলে সাজা অন্তত ৬ মাস থেকে দু’ বছরের জেল এবং ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। গণমাধ্য‌মে যদি ছেলে/মেয়ে বা অন্য‌ কোনও আত্মীয়ের বিবাহের জন্য‌ পণ চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তা হলে ছাপাখানা, প্রচারক, প্রকাশকের সাজা হবে ৬ মাস থেকে ৫ বছর পর্যন্ত জেল অথবা ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা।

মহিলাদের করণীয়ঃ

বিবাহযোগ্য‌ মহিলারা পণপ্রথা ও বাল্য‌বিবাহের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন। পণপ্রথা রোধ করার বিরুদ্ধে তাঁরা রাস্তায় নামতে পারেন, আবার ব্য‌ক্তিগত ক্ষেত্রে পণ না দেওয়ার জন্য‌ অভিভাবকদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন।

অভিযোগ জানানোর জায়গাঃ

পাত্রপক্ষ পণ দাবি করলে, যাঁর কাছে দাবি করেছে, তিনি নিজে বা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় থানায় এফআইআর করতে পারেন। আর পুলিশ অভিযোগ না নিলে ওই এলাকার মেট্রোপলিটান ম্য‌াজিস্ট্রেট বা ওই এলাকার প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্য‌াজিস্ট্রেটের কাছে অভিযোগ জানানো যায়। রাজ্য‌ সরকারও এই আইন প্রয়োগের জন্য‌ বিশেষ অফিসার নিয়োগ করতে পারে। জেলা সমাজকল্য‌াণ আধিকারিকের কাছেও অভিযোগ জানানো যায়। মেট্রোপলিটান ম্য‌াজিস্ট্রেট বা প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্য‌াজিস্ট্রেট নিজে উদ্য‌োগ নিয়ে অথবা পুলিশি রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযোগের বিচার করতে পারেন। এ ছাড়াও যাঁর কাছে বা যাঁদের কাছে পণ চাওয়া হয়েছে তিনি বা তাঁরা যে কোনও স্বীকৃত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে নালিশ জানাতে পারেন। এই অভিযোগ জানানোর কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই।

পণজনিত মৃত্য‌ুঃ

বিয়ের অল্প কিছু দিনের মধ্য‌ে অথবা ৭ বছরের মধ্য‌ে বধূ আত্মহত্য‌া করলে অথবা তার অস্বাভাবিক মৃত্য‌ু হলে যদি প্রমাণিত হয় যে মৃতার স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির অন্য‌ান্য‌ আত্মীয়-স্বজনের দুর্ব্য‌বহার, শারীরিক নির্যাতন ইত্য‌াদি তাঁকে আত্মহত্য‌ায় প্ররোচনা জুগিয়েছে বা তারা হত্য‌া করেছে তা হলে ধরে নেওয়া যেতে পারে এর মূলে পণ আদায়ের অভিসন্ধি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অপরাধ যে এলাকায় হয়েছে সেখানকার থানায় অভিযোগ দায়ের করতে হবে। পণ জনিত মৃত্য‌ু হলে শুধু জিডি বা জেনারেল ডায়েরি করলে হবে না, রীতিমতো ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট বা এফআইআর দাখিল করতে হবে। সেই এফআইআরের মাধ্য‌মে পুলিশ মামলা শুরু করতে বাধ্য‌। দায়রা আদালতে অথবা প্রথম শ্রেণির ম্য‌াজিস্ট্রেটের এজলাসে এই মালার বিচার হবে। এই অপরাধের বিচার হবে জামিন অযোগ্য‌ ধারায়। শাস্তিও জামিন অযোগ্য‌। কমপক্ষে ৭ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সুযোগ আইনে রয়ে গিয়েছে। আর সেই সঙ্গে পণ দেওয়া নেওয়ার ব্য‌াপারে কোনও চুক্তি স্বাক্ষরিত থাকলে তা বাতিল বলে গণ্য‌ হবে।

মূল্যায়নঃ

পণ প্রথা বিরোধী আইনে বিভিন্ন শাস্তির বিধান থাকলেও এখনো তাঁর সফন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এরজন্য প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি। আইন এবং সামাজিক সচেতনতা উভয়েই পারে এই সামাজিক অভিশাপের হাত থেকে সমাজকে মুক্তি দিতে।


  

স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি যোগাযোগ করো 

8967181871 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়   

এবং 

ডিজিটাল মাধ্যমে অনলাইন/ অফলাইন 

ক্লাসেরও সুব্যবস্থা আছে


Main Menu


 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code