শ্রমিক আন্দোলন A টু Z; Trade union movement

Ad Code

শ্রমিক আন্দোলন A টু Z; Trade union movement


University of Burdwan

4th Semester (Honours)

Political Science

Paper: CC-11; Social Movements in India

ভূমিকাঃ

শিল্প বিকাশের গোড়ার দিকে  মালিক- শ্রমিক সম্পর্ক যথেষ্ঠ ভালো ছিল এবং তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিল বলে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক নিরূপণের জন্য কোনো সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা ছিলনা। শিল্পবিকাশের সাথে সাথে এই মালিক-শ্রমিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ফলে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা কিংবা কিংবা মালিক শ্রমিক সম্পর্কের সমন্বয় সাধনের জন্য বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন বা ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে ওঠে। মূলত ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে ভারতবর্ষে শ্রমিক আন্দোলনের সূত্রপাত হয় এবং বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকের প্রারম্ভে ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রমিক সংঘগুলির জন্ম হয়।

সংজ্ঞাঃ

ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রমিক সংগঠন হল  শ্রেমিক শ্রেণির এমন একটি সংগঠন যা শ্রমিকদের শ্রেণীর স্বর্থ ও সুবিধাগুলিকে রক্ষা করে, জনসমক্ষে তুলে ধরে এবং উন্নত করবার চেষ্ঠা করে। এর মূল উদ্দেশ্য হন, এর সদস্যদের রক্ষা করা, এবং সব ধরনের শোষণের বিরোধিতা করা। অর্থাৎ ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রমিক সংগঠন কিছু সাধারন লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে সংগঠিত হয় এবং  মালিক-শ্রমিক  সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখে।

লেস্টার এর মতে, ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রমিক সংঘ হল শ্রমিক শ্রেনীর এমন একটি সমিতি বা সংগঠন যা মূলত এর সদস্যদের কর্মসংস্থানের অবস্থা বজায় রাখা বা উন্নত করার জন্য কাজ করে।

কার্ল মার্কস এর মতে ট্রেড ইউনিয়ন হল নিদিষ্ট স্তরের নীচে মজুরির হ্রাস রোধকারী একটি সংগঠন। এটি শ্রম শক্তির দামকে এর মুল্য থেকে নীচে নামতে বাধা দেয়।

অস্ট্রেলিয়ান ব্রুয়ো অফ স্টাটেস্টীক অনুযায়ি ট্রেড ইউনিয়ন হল শ্রমজীবি শ্রেণীর সমনবয়ে গঠিত একটি সংস্থ্যা এর মূল ক্রিয়াকলাপ এর সদস্যদের বেতনের হার এবং কর্মসংস্থানের শর্তাদির উপর আলোকপাত করা।

প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য;

১) ক্ষুদ্র আয়তনঃ

প্রায় অধিকাংশ ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রমিক সংঘ আয়তনে খুবই ছোট। ট্রেড ইউনিয়নগুলির এই ক্ষুদ্রাকৃতির কারণ হিসাবে ১৯২৬ সালের ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন অ্যাক্টকে দায়ী করা যেতে পারে। এই অ্যাক্ট অনুযায়ি ট্রেড ইউনিয়নগুলি আকারে ছোট হবে এবং সর্বচ্চ সাত জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। এছাড়া মতাদর্শগত বিভিন্নতার কারনে একটি সংস্থায় একাধিক  ছোট ছোট ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হতে পারে।

২) দুর্বল অর্থনীতিক উৎসঃ

ট্রেড ইনিয়নগুলির অর্থের প্রাথমিক উৎস হল সদস্যপদ সাবস্ক্রিপসন । এই সদস্যপদ সাবস্ক্রিপসন যথেস্থ কম হওয়ায় ট্রেড ইউনিয়নগুলির অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। মূলত বেশি সংখ্যক শ্রমিককে তাদের সংগঠনের সাথে যুক্ত করবার উদ্দেশ্যেই সদস্যপদ সাবস্ক্রিপসন কম করা হয়। অথচ ইউনিয়নগুলির কর্মকান্ড পরিচালনা করবার জন্য যথেষ্ঠ অর্থের প্রয়োজন হয় । ফলে অর্থের অভাবে গুরুত্বপুর্ণ বিষয় ছাড়া তাদের আন্দোলন করতে দেখা যায়না।

৩) সদস্য পদের অপ্রতুলতাঃ

ভারতে ট্রেড ইউনিয়নগুলি খুব কম ক্ষেত্রেই সংগঠিত হয়েছে । মূলত শহরের শিল্প কারখানায় ট্রেডইউনিয়নগুলি গঠিত হয়। গ্রামাঞ্চলে এর তেমন উপস্থিতি দেখা যায়না। শহরাঞ্চলে যেখানে ট্রেড ইউনিয়নগুলি যথেষ্ঠ সক্রিয় সেখানে অধিকাংশ শ্রমিক এর  থেকে দূরে থাকে। ফলে লোকবল বা জন সমর্থনের অভাবে ট্রেড ইউনিয়নগুলি আন্দোলনে যেতে পারেনা।

৪) রাজনীতিক অনুমোদনঃ

ভারতে প্রত্যেকটি ট্রেড ইউনিয়ন রাজনীতিক প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। প্রায় প্রত্যেকটি ট্রেড ইউনিয়ন কোনো না কোনো রাজনীতিক দলের প্রতি অনুগত থাকে । তা ছাড়া বর্তমানে প্রায় প্রতিটি রাজনীতিক দলের ট্রেড ইউনিয়ন শাখা আছে । ফলে রাজনীতিক বাধ্যবাধকতার কারনে তারা আন্দোলনে যেতে পারেনা

৫) নিরক্ষরতাঃ

অধিকাংশ ভারতীয় শ্রমিকরা নিরক্ষর, শুধু নিরক্ষরতাই নয়, ভাষা ধর্ম , জাতি, সাংস্কৃতি প্রভুতির ভিত্তিতে তারা বিভক্ত। নিরক্ষরতার কারনে সংগঠনের গুরুত্ব বা পরিচালনা সম্পর্কে তারা যথেষ্ঠ ওয়াকিবহল নয়। ফলে সংগঠনের বাইরে কোনো নেতা বা কোনো রাজনীতিক দলের দ্বারা তারা প্রভাবিত হয়। ফলে এক সময় তারা স্বাধীন ভাবে কোনো কাজেই পরিচালনা করতে পারেনা। 

ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের কারণঃ

ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে স্বদেশি আন্দোলনের সময় থেকে শ্রমিক আন্দোলনের সুত্রপাত ঘটে। শ্রম-অসন্তোষ সহ বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে এই সময় বাংলাসহ দেশের বিভিন্ন অংশে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের সুত্রপাত ঘটে। নীচে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের কারণগুলি আলোচনা করা হল-

 ১) ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতের বিভিন্ন ঘটনার প্রভাবঃ

ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে বিভিন্ন ঘটনা ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিল। যেমন- কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের মধ্যে স্বাক্ষরিত লক্ষ্ণৌ চুক্তি (১৯১৬ খ্রি.), তিলক ও বেসান্তের নেতৃত্বাধীন হোমরুল আন্দোলন (১৯১৬ খ্রি.) জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকাণ্ড (১৯১৯ খ্রি.) শ্রমিকশ্রেণিকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। ফলে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে।


২) নভেম্বর বিপ্লবঃ

লেনিনের নেতৃত্বে ১৯১৭ সালে রাশিইয়ার নভেম্বর বিপ্লব ভারত সহ বিশ্বের সমস্থ শ্রমিকশ্রেণিকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। এই বিপ্লবের মাধ্যমে রুশ শ্রমিকশ্রেণী রাশিয়ার ক্ষমতা দখল করে এবং বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। নভেম্বর বিপ্লবের এই অসামান্য অবদান পরাধীন ভারতের শ্রমিক শ্রেনীকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে।


৩) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবঃ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতে শ্রমিকদের সংখ্যা বাড়লেও তাদের মজুরি, বাসস্থান, কাজের মেয়াদ প্রভৃতি সংক্রান্ত সমস্যাগুলিকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে যুদ্ধ শেষে শ্রমিক ছাঁটাই, মূল্যবৃদ্ধি, কাজের অনিশ্চয়তা প্রভূতি বিষয় শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে তীব্র অসন্তোষের জন্ম দেয়।


৪) শ্রমিক সংগঠনের অবদানঃ

সুসংগঠিত শ্রমিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠা ট্রেড ইউমিয়ন আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। ১৯২০ সালের মধ্যেই সারাদেশে ১২৫টির বেশি ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হয়। ভারতের প্রথম বৃহত্তম শ্রমিক সংগঠন অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস ( AITUC) গঠিত হয়  ১৯২০ সালের ৭ই জুলাই। ফলে অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ সংগঠনের আওতায় এলে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনে গতি আসে।


৫) বামপন্থীদের সহযোগীতাঃ

ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনে জাতীয় কংগ্রেসের তেমন অবদান না থাকলেও বামপন্থী দলগুলি ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনে যথেষ্ঠ সাহায্য সহযোগীতা করে। শ্রমিক শ্রেণির স্বার্থে, বামপন্থীরাও আন্দোলন শুরু করে। হেমন্ত সরকার, পি.সি. যোশি, মিরাজ কর, মুজাফফর আহমেদ প্রমূখ বামপন্থী নেতৃত্ব শ্রমিক আন্দোলনের ব্যাপক প্রসার ঘটায়।


শ্রমিক আন্দোলনের সাফল্য বা শক্তিঃ

ভারতে শ্রমিক আন্দোলনের ঘটনা খুব বেশি দিনের নয়। মূলত উনিশ শতকের দ্বিতীয় ভাগ থেকে শ্রমিকরা বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্তভাবে ধর্মঘটের মাধ্যমে নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরে। সপ্তাহে একদিন বাধ্যতামূলক ছুটির দাবি নিয়ে বোম্বাই-এ প্রথম শ্রমিক আন্দোলন সংঘটিত হয়।

শ্রমিক আন্দোলনের বিকাশঃ

ভারতের শ্রমিক শ্রেনী প্রথম রাজনৈতিক ধর্মঘটে সামিল হয়েছিল ১৯০৮ সালে। বাল গঙ্গাধর তিলককে ব্রিটিশ সরকার গ্রেফতার করলে মুম্বাইয়ের শ্রমিকরা এই আন্দোলনে সামিল হয়।  ১৯১৭ সালে আগস্ট মাস থেকে সুতিবস্ত্র শিল্পে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ৩০টির মত ধর্মঘট সংঘটিত হয়। এর ফলে শ্রমিকদের মজুরি কিছুটা বৃদ্ধিও পায়। ১৯১৯ সালে জানুয়ারি মাসে বোম্বাইয়ে সুতাকলগুলিতে সর্বাত্মক হরতাল সংগঠিত হয়। এই হরতাল পরবর্তীতে বন্দর, রেল ওয়ার্কশপ, টাকশাল ও প্রযুক্তি শিল্পক্ষেত্র প্রভূতিতে সম্প্রসারিত হয় এবং বাংলা, বিহার আসাম ও মাদ্রাজেও এই ধর্মঘটের রেশ ছড়িয়ে পড়ে। বাংলার পাটকলগুলিতে ও আসামের চা বাগানে এই ধর্মঘটের প্রভাব পড়ে।

১৯২০ সালে সারা ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শ্রমিক আন্দোলন চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। ওই বছর বাংলায় ৪০টির মত শ্রমিক ইউনিয়ন গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে আরও ৩৫টি শ্রমিক ইউনিয়ন গঠিত হয়। ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে কানপুরে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২৭ সালে সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলনে শ্রমিকশ্রেনী সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। ১৯২৭ সালের ১লা মে বোম্বাইয়ে শ্রমিকরা মে দিবস পালন করে তাদের আন্দোলনকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের মর্যদা প্রদান করে।

বর্তমানে শ্রমিক সংঘগুলি কোনো না কোন রাজনৈতিক দলের পৃষ্টপোষকতায় গড়ে উঠছে। এবং এই উক্ত রাজনৈতিক দলের সাহায্য ও সমর্থনে তাঁদের আন্দোলন গড়ে তুলছে। বর্তমানে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ শ্রমিক সংঘগুলি হল-

SL No

Name of The Trade Union

Year of Establishment

Political Affiliation

1

All India Trade Union Congress (AITUC)

1920

CPI

2

Indian National Trade Union Congress (INTUC)

1947

INC

3

Bhartiya Mazdoor Sangh (BMS

1955

BJP

4

Centre for Indian Trade Unions (CITU)

1970

CPIM

5

Hind Mazdoor Sabha (HMS)

1948

SP

6

All India Trade Union Centre (AIUTUC

1958

SUCI

7

elf-employed Women's Association of India (SEWA)

1972

 

8

Trade Union Coordination Centre

1970

AIFB

9

All India Central Council of Trade Union

1989

CPI(M.L)


শ্রমিক আন্দোলনের সাফল্যঃ

ভারতে শ্রমিক সংঘ আন্দোলনের সফলতার ক্ষেত্রে মিশ্র প্রভাব দেখা যায়।  শ্রমিক আন্দোলনের প্রথম দিকে বেশিরভাগ শ্রমিক সংঘ ধর্মঘটের মাধ্যমে তদের দাবী দাওয়া প্রকাশ করতো বা আন্দোলন গড়ে তুলতো। এইসব ধর্মঘটের সময়ই শ্রমিক সংগঠনের অস্তিত্ব উপলব্ধি করা যেত এবং ধর্মঘট শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এদের অস্তিত্বের অবসান হতো। মূলত মজুরি বা বেতন বৃদ্ধি, কাজের পরিবেশ, কাজের সময় প্রভুতিকে কেন্দ্র করে এইসব আন্দোলন সংঘটিত হত। ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে শ্রমিক শ্রেনী স্বদেশী চেতনার দ্বারাও প্রভাবিত হয়ে অল্পবিস্তর আন্দোলন গড়ে তুলতো। 

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি শ্রমিক শ্রমিক সংঘ রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে উঠছে এবং একটি স্থায়ী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বর্তমান ভারতের শ্রমিক সংঘগুলি ধর্মঘট বা হরতাল, বেতন বা মজুরি বৃদ্ধি বোনাস প্রভূতির বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করেনা। জাতীয় স্বার্থে কল্যাণমূলক সুযোগ-সুবিধা এমনকি রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের দাবিতে আন্দোলন করে। প্রকৃতপক্ষে ভারতের শ্রমিক সংঘগুলির প্রকৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটেছে। ফলে ভারতের শ্রমিক সংঘগুলি শ্রমিকদের অন্যায়-অবিচার ও শোষণের হাত থেকে মুক্তির সাথে সাথে শ্রমিকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, চেতনা ও রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। শ্রমিক আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব  সরকারকে শ্রমিক কল্যাণ ও নিরাপত্তামূলক আইন প্রণয়নে এবং মালিক শ্রেণীকে তা মেনে চলতে বাধ্য করেছে।

ভারতের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতেও শ্রমিক সংঘ খুবই শক্তিশালী। যেমন- কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন, রেলওয়ে কর্মী ইউনিয়ন, ডাক ও তার কর্মচারী ইউনিয়ন, সারা ভারত ব্যাঙ্ক কর্মচারী ইউনিয়ন প্রভূতি।

 

শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে নয় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ভারতের শ্রমিক সংঘগুলি প্রগতিশীল শক্তিতে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহন, আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির সাথে সমন্বয় সাধন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দিবস পালন প্রভূতির মাধ্যমে ভারতের শ্রমিক সংঘগুলি আন্তর্জাতিক মর্যাদা লাভ করেছে। 


ব্যার্থতা বা দুর্বলতাঃ

          ভারতের শ্রমিক আন্দোলনে উপরিউক্ত শক্তি বা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও এর দুর্বলতাও কোনো অংশে কম নয়। নীচে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ দুর্বলতাগুলি উল্লেখ করা হল।

১) ক্ষুদ্র আয়তনঃ

প্রায় অধিকাংশ ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রমিক সংঘ আয়তনে খুবই ছোট। ট্রেড ইউনিয়নগুলির এই ক্ষুদ্রাকৃতির কারণ হিসাবে ১৯২৬ সালের ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন অ্যাক্টকে দায়ী করা যেতে পারে। এই অ্যাক্ট অনুযায়ি ট্রেড ইউনিয়নগুলি আকারে ছোট হবে এবং সর্বচ্চ সাত জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। এছাড়া মতাদর্শগত বিভিন্নতার কারনে একটি সংস্থায় একাধিক  ছোট ছোট ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হতে পারে।

২) দুর্বল অর্থনীতিক উৎসঃ

ট্রেড ইনিয়নগুলির অর্থের প্রাথমিক উৎস হল সদস্যপদ সাবস্ক্রিপসন । এই সদস্যপদ সাবস্ক্রিপসন যথেস্থ কম হওয়ায় ট্রেড ইউনিয়নগুলির অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। মূলত বেশি সংখ্যক শ্রমিককে তাদের সংগঠনের সাথে যুক্ত করবার উদ্দেশ্যেই সদস্যপদ সাবস্ক্রিপসন কম করা হয়। অথচ ইউনিয়নগুলির কর্মকান্ড পরিচালনা করবার জন্য যথেষ্ঠ অর্থের প্রয়োজন হয় । ফলে অর্থের অভাবে গুরুত্বপুর্ণ বিষয় ছাড়া তাদের আন্দোলন করতে দেখা যায়না।

৩) সদস্য পদের অপ্রতুলতাঃ

ভারতে ট্রেড ইউনিয়নগুলি খুব কম ক্ষেত্রেই সংগঠিত হয়েছে । মূলত শহরের শিল্প কারখানায় ট্রেড ইউনিয়নগুলি গঠিত হয়। গ্রামাঞ্চলে এর তেমন উপস্থিতি দেখা যায়না। শহরাঞ্চলে যেখানে ট্রেড ইউনিয়নগুলি যথেষ্ঠ সক্রিয় সেখানে অধিকাংশ শ্রমিক এর  থেকে দূরে থাকে। ফলে লোকবল বা জন সমর্থনের অভাবে ট্রেড ইউনিয়নগুলি আন্দোলনে যেতে পারেনা।

৪) রাজনীতিক অনুমোদনঃ

ভারতে প্রত্যেকটি ট্রেড ইউনিয়ন রাজনীতিক প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। প্রায় প্রত্যেকটি ট্রেড ইউনিয়ন কোনো না কোনো রাজনীতিক দলের প্রতি অনুগত থাকে । তা ছাড়া বর্তমানে প্রায় প্রতিটি রাজনীতিক দলের ট্রেড ইউনিয়ন শাখা আছে । ফলে রাজনীতিক বাধ্যবাধকতার কারনে তারা আন্দোলনে যেতে পারেনা। এছাড়া কোনো একটি শ্রমিক সংঘ কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলনে সামিল হলে, অপর শ্রমিক সংঘ তা ভেঙ্গে দিতে পিছপা হয়না।  

৫) নিরক্ষরতাঃ

অধিকাংশ ভারতীয় শ্রমিকরা নিরক্ষর, শুধু নিরক্ষরতাই নয়, ভাষা ধর্ম , জাতি, সাংস্কৃতি প্রভুতির ভিত্তিতে তারা বিভক্ত। নিরক্ষরতার কারনে সংগঠনের গুরুত্ব বা পরিচালনা সম্পর্কে তারা যথেষ্ঠ ওয়াকিবহল নয়। ফলে সংগঠনের বাইরে কোনো নেতা বা কোনো রাজনীতিক দলের দ্বারা তারা প্রভাবিত হয়। ফলে এক সময় তারা স্বাধীন ভাবে কোনো কাজেই পরিচালনা করতে পারেনা।


এই পেপারের ওপর অন্যান্য নোটস

প্রথম অধ্যায়

১) সামাজিক আন্দোলন কাকে বলেএর প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ।

২) ভারতে 'নতুন সামাজিক আন্দোলনের উপর একটি টীকা লেখ । ৫ (২০২১)

৩) ভারতে 'পুরাতনসামাজিক আন্দোলনের উপর অতি সংক্ষিপ্ত টাকা লেখো। ভারতে 'নব্যসামাজিক আন্দোলনের একটি উদাহরণ দাও ৫ (২০১৯)

৪) সাবেকি ও নব্য সামাজিক আন্দোলনের পার্থক্য নির্ণয় করো। ৫ (২০২০)

৫) ভারতের পুরাতন ও নতুন সামাজিক আন্দোলনের মধ্যে যে কোনো তিনটি পার্থক্য চিহ্নিত কর। ৫ (২০২১)

৬) ভারতের 'পুরাতনএবং 'নতুনসামাজিক আন্দোলনগুলির মধ্যেকার পার্থক্যগুলি চিহ্নিত করো। ১০(২০২২)


স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি যোগাযোগ করো 

8967181871 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়   

এবং 

ডিজিটাল মাধ্যমে অনলাইন/ অফলাইন 

ক্লাসেরও সুব্যবস্থা আছে


দ্বিতীয় অধ্যায়

১) কেন সংরক্ষণ নীতিসমূহকে ইতিবাচক বৈষম্য বলা হয়৫ (২০২১)

২) ভারতের সংবিধানের কোন ধারায় তপশিলি জাতি এবং তপশিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। এই সংরক্ষণ নীতিসমূহকে কেন 'সদর্থক বা ইতিবাচক বৈষম্যবলা হয়ে থাকে৫ (২০১৯)

৩) দলিত প্যান্থার আন্দোলন সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখা ৫ (২০২০)

৪) ভারতে প্যান্থার আন্দোলনের একটি রূপরেখা দাও। এই আন্দোলনের আদর্শগত ভিত্তিটি উল্লেখ করো। ১০ (২০১৯)

৫) ভারতে দলিত আন্দোলনের প্রকৃতি বিষয়ে সমালোচনামূলক নিবন্ধ লেখ। ১০ (২০২০)

৬) ভারতে দলিত প্যান্থার আন্দোলনের একটি রূপরেখা দাও। এই আন্দোলনের আদর্শগত ভিত্তিটি উল্লেখ করো। ১০ (২০২২)

৭) ভারতে দলিত আন্দোলনের একটি রূপরেখা দাও। ১০ (২০২১)

 

তৃতীয় অধ্যায়

১) ভারতে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন সংহত হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটটি বিশ্লেষণ করো। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অনুমোদিত ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনটির নাম লেখো। ১০ (২০১৯

২) দুটি বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে ভারতে শ্রমিক আন্দোলনের উৎপত্তি ও বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করো। ১০ (২০২০)

৩) ভারতে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন সংহত হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটটি বিশ্লেষণ কর। ১০ (২০২১)

৪) ভারতে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের দুর্বলতাগুলি চিহ্নিত করো। ৫ (২০২০)

৫) ভারতের ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের দুর্বলতাগুলি কী৫ (২০২২)

৬) ভারতের যে কোনো একটি বৃহৎ ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের নাম উল্লেখ করো। শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণার্থে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের ভূমিকা সংক্ষেপে লেখো। ৫ (২০১৯)

৭) নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়নে কংগ্রেসের (AITUC) ওপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ। ৫ (২০২০)

8) নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের উপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ । ৫ (২০২১)

৯) AITUC-এর উপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো। INTUC-এর পুরো নাম লেখো। ৫ (২০২২)


চতুর্থ অধ্যায়

১) ভারতের কৃষক আন্দোলনের দুর্বলতা বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ। ৫ (২০২০)

২) ভারতের কৃষক আন্দোলনের প্রধান দূর্বলতাগুলি চিহ্নিত কর। ৫ (২০২১)

৩) তেলেঙ্গানার কৃষক আন্দোলনের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো। কোন রাজ্যে এই আন্দোলন সংঘটিত হয়১০ (২০২০)

৪) ভারতে তেলেঙ্গানা কৃষক আন্দোলনের উপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ। ৫ (২০২১)

৫) তেলেঙ্গানা আন্দোলনের উপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো। ভারতের কোন প্রদেশ রাজ্যে এই আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল৫ (২০২২)

৬) ভারতে 'তেভাগা আন্দোলনের একটি রূপরেখা দাও। ১০ (২০২১)

৭) কোন সময়ে 'তেভাগাআন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল? 'তেভাগা আন্দোলন কোন কোন ইস্যুকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল৫ (২০১৯)

৮) তেভাগা আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণগুলি কী ছিল৫ (২০২০)

৯) তেভাগা আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণগুলি কী ছিল৫ (২০২২)


স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি যোগাযোগ করো 

8967181871 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়   

এবং 

ডিজিটাল মাধ্যমে অনলাইন/ অফলাইন 

ক্লাসেরও সুব্যবস্থা আছে

 

পঞ্চম অধ্যায়

১) 'নারীবাদ'-কে তুমি কীভাবে সংজ্ঞায়িত করবেভারতে নারীবাদী আন্দোলনের প্রকৃতিটি বিশ্লেষণ করো। ১০ (২০১৯)

২) ভারতে নারীবাদী আন্দোলনের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো। ৫ (২০২০)

৩) ভারতে নারী আন্দোলনের মুখ্য বৈশিষ্টগুলি আলোচনা করো। ১০ (২০২০)

৪) ভারতে নারীবাদী আন্দোলনের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো।৫ (২০২১)

৫) ভারতে নারী আন্দোলনের মুখ্য বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা কর। ১০ (২০২১)

৬) ভারতের নারী আন্দোলনের মুখ্য বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো। ভারতের নারী আন্দোলনের দুজন নেতা / নেত্রীর নাম লেখো। ১০ (২০২২)

৭) পিতৃতন্ত্রকে তুমি কীভাবে সংজ্ঞায়িত করবে। ভারতে নারীবাদী আন্দোলনের তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো। ৫ (২০১৯)


ষষ্ঠ অধ্যায়

১) ভারতে পরিবেশ আন্দোলনের বৈশিষ্টগুলি চিহ্নিত করো।। ১০ (২০২০)

২) পরিবেশের ক্ষয়ের আলোকে ভারতে পরিবেশ আন্দোলনের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করো। কোন বছরে 'চিপকোআন্দোলন শুরু হয়েছিল১০ (২০১৯)

৩) পরিবেশ সমস্যা সমাধানে ভারত সরকার কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থাগুলি কী কী৫ (২০২২)

৪) ভারতের পরিবেশ আন্দোলনের বৈশিষ্ট্যগুলি চিহ্নিত করো। স্থায়ী উন্নয়ন বলতে তুমি কী বোঝো১০ (২০২২)

৫) চিপকো আন্দোলনের উপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো। চিপকো আন্দোলনের দুজন নেতার নাম লেখো। ৫ (২০২২)

৬) চিপকো আন্দোলনের উপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ। ৫ (২০২০)

৭) পরিবেশ ক্ষয়ের আলোকে ভারতে চিপকো আন্দোলনের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর। ১০ (২০২১)

৮) নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের যে কোনো একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার নাম লেখো। অতি সংক্ষেপে এই আন্দোলনের বর্ণনা।৫ (২০১৯)

৯) ভারতে নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের উপর একটি টীকা লেখ। ৫ (২০২১)


স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি যোগাযোগ করো 

8967181871 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়   

এবং 

ডিজিটাল মাধ্যমে অনলাইন/ অফলাইন 

ক্লাসেরও সুব্যবস্থা আছে


Main Menu


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code