কৌটিল্যের দন্ডনীতি; kautilya dandaniti pdf

Ad Code

কৌটিল্যের দন্ডনীতি; kautilya dandaniti pdf

 

কৌটিল্যের দন্ডনীতি




ভূমিকাঃ

          কৌটিল্যের রাষ্ট্রচিন্তার সর্বাধিক গুরুত্ব পূর্ণ উপাদান হল দন্ডনীতি, যেখানে কৌটিল্য দন্ড বা বল প্রয়োগের মাধ্যমে সকলের ওপর শাসন কায়েম বা সকলকে রক্ষার কথা বলেছেন। এই দন্ডনীতির মাধ্যমে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা ও সুস্থিতি সুনিশ্চিত হয়।


দন্ডনীতিঃ

          ব্যুৎপত্তিগত অর্থে দন্ডনীতি হল দন্ড বা শাস্তিদানের নিয়মনীতি। রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালিত হয় দন্ড বা শাস্তি বিধানের মাধ্যমে। দন্ড বা শাস্তিদানের এই অধিকার আছে কেবল রাষ্ট্রের হাতে। রাষ্ট্রই হল বৈধ দমন শক্তির অধিকারী। এ কে সেন এর মতে, সঠিভাবে রাজ্যের শাসনকার্য পরিচালনার নীতি সমূহই হল দন্ডনীতি। সুতরং রাষ্ট্রনীতি বা রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালনার নীতিসমূহই হল দন্ডনীতি। প্রাচীন ভারতে প্রকৃত অর্থে রাজাই ছিলেন দন্ডাধিকারী।

কৌটিল্যের সপ্তাঙ্গ তত্ত্বের ষষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল দন্ড। কৌটিল্য দন্ড বলতে একদিকে রাষ্ট্রের দমনমূলক ক্ষমতাকে বুঝিয়েছেন এবং অন্যদিকে  সেনাবাহিনীকেও দন্ডের অন্যতম অংশ বলে তুলে ধরেছেন। অর্থাৎ রাষ্ট্রের দমনমূলক ক্ষমতা এবং সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়েই কৌটিল্যের দন্ডনীতি।


রাষ্ট্রের দমনমূলক ক্ষমতাঃ

কৌটিল্য দন্ড বা দমনমূলক ক্ষমতা বলতে রাষ্ট্রের দন্ডবিধানের  নিয়মকানুনকে বুঝিয়েছেন। এর দ্বারা নিয়মভঙ্গকারী বা অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া হয়। দণ্ড বিধানের মাধ্যমে রাজা প্রশাসনকে সুদৃঢ় করে এবং প্রজাদের বশে আনতে পারে। কৌটিল্য তিন প্রকার দন্ডের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন-

১)অর্থদণ্ড;

২) কায়িক দন্ড এবং

৩) নির্বাসন;

কৌটিল্য দন্ড প্রয়োগের ক্ষেত্রে অপরাধের প্রকৃতি ও উদ্দেশ্য বিবেচনার কথা বলেছেন। দণ্ডের তীক্ষ্ণ প্রয়োগ সমাজে উদ্বেগ ও ত্রাসের সৃষ্টি করে আবার দণ্ডের মৃদু প্রয়োগ রাজার কর্তৃত্বকে বা শাসনকে দুর্বল করে তোলে। কৌটিল্য দন্ডবিধানের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের কথাও উল্লেখ করেছেন। শত্রু কিংবা রাজপুত্র প্রত্যেকের প্রতি দন্ড পক্ষপাতহীনভাবে প্রযুক্ত হবে।


সেনাবাহিনীঃ

কৌটিল্য সেনাবাহিনীকেও দন্ডনীতির অংশ বলে মনে করেছেন। এক্ষেত্রে কৌটিল্য মূলত হস্তী, অশ্ব, রথ এবং পদাতিক এই চার প্রকার সেনার কথা বলেছেন। এই সেনাবাহিনী হবে বংশানুক্রমিক, অনুগত, যুদ্ধে পারদর্শী, অজেয় এবং প্রশিক্ষিত। সেনারা রাজার ইচ্ছায় পরিচালিত হবে এবং রাজার নির্দেশমত কাজ করবে। সেনাবাহিনীর গঠিত হবে সাধারণত ক্ষত্রীয়দের দ্বারা, তবে জরুরি ভিত্তিতে নিম্নবর্ণের মানুষদেরও  সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।


দন্ডনীতির প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্যঃ

          কৌটিল্যের দন্ডনীতি ব্যাখা বিশ্লেষন করলে এর নিম্বলিখিত প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করা যেতে পারে। যেমন-


১) প্রশাসনের সুস্থতা ও সংহতির ধারকঃ

কৌটিল্যের দণ্ডনীতি হল রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের সুস্থতা ও সংহতির ধারক। দণ্ড দানের সক্রিয়তার ওপর রাজার কর্তৃত্ব নির্ভরশীল। দণ্ডের অতি প্রয়োগ প্রজাসাধারণকে পীড়িত করে। আবার দণ্ডের লঘু প্রয়োগ হলে প্রজাসাধারণের মনে রাজার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনে অনীহার সৃষ্টি হয়।


২) সর্বজনীন ও নিরপেক্ষ বিষয়ঃ

কৌটিল্যের দন্ডনীতি সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সাধারন জনগন থেকে শুরু করে রাজপুত্র সকলের ক্ষেত্রে  দণ্ড সমানভাবে প্রযুক্ত হবে। অপরাধের গুরুত্ব ও উদ্দেশ্য অনুযায়ী সকলে সমান শাস্তি পাবে। অর্থাৎ রাজা দণ্ডনীতি প্রয়োগে কারো প্রতি কোনো পক্ষপাতিত্ব করবেনা।


৩) তিন বিদ্যার সমন্বয়য়ঃ

কৌটিল্যের দণ্ডনীতিতে আম্বীক্ষিকী, ত্রয়ী এবং বার্তা এই তিন বিদ্যার সমন্বয় ঘটেছে। দন্ডনীতির মাধ্যমে এই ত্রিবিধ বিদ্যার সমন্বয়, অগ্রগতি ও মঙ্গলসাধন সম্ভব। অর্থাৎ এই তিন বিদ্যাকেও দন্ডনীতির অধীনে থাকতে হয় এবং দণ্ডনীতির অধীনে থেকেই নিজেদের উৎকর্ষসাধন করতে হয়। দন্ডনীতি অন্য তিন বিদ্যাকে সুষ্ট ও সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রন করে বলে মানবজীবনে শ্রী ও সমৃদ্ধি সুনিশ্চিত হয়।  


৪) ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাঃ

কৌটিল্য তাঁর দন্ডনীতিতে সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। কৌটিল্যের মতে প্রতিটি মানুষ স্ব স্ব ধর্ম ও কর্মে সঠিভাবে নিযুক্ত থাকলে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। রাজার কর্তব্য হল দণ্ড নীতির মাধ্যমে চতুর্বর্ণের মানুষকে স্ব স্ব ধর্ম ও কর্মে নিযুক্ত রাখা। চার বর্ণের মানুষ নিজেরা নিজের কর্ম সুষ্ঠভাবে সম্পাদন করলে সকলে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।  


৫) সেনাবাহিনীঃ

কৌটিল্য সেনাবাহিনীকেও দন্ডনীতির অংশ বলে মনে করেছেন। কৌটিল্যের মতে, সেনাবাহিনী হবে বংশানুক্রমিক, অনুগত, যুদ্ধে পারদর্শী, অজেয় এবং প্রশিক্ষিত। সেনারা রাজার ইচ্ছায় পরিচালিত হবে এবং রাজার নির্দেশমত কাজ করবে। সেনাবাহিনীর গঠিত হবে সাধারণত ক্ষত্রীয়দের দ্বারা, তবে জরুরি ভিত্তিতে নিম্নবর্ণের মানুষদেরও  সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।


মূল্যায়নঃ

          পরিশেষে বলা যায় দণ্ডনীতির সঠিক প্রয়োগ একটি আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের অন্যতম শর্ত। এই দণ্ডনীতির মাধ্যমে একদিকে রাজার কর্তৃত্ব বজায় থাকছে অন্যদিকে রাষ্ট্রে শান্তি শৃঙ্খলা সুনিশ্চিত হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বের যেকোন রাষ্ট্রের কাছে কৌটিল্যের দন্ডনীতি অত্যন্ত অনুকরণীয় বিষয়।


স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি যোগাযোগ করো 

8967181871 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়   

এবং 

ডিজিটাল মাধ্যমে অনলাইন/ অফলাইন 

ক্লাসেরও সুব্যবস্থা আছে


Main Menu

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code