The University of Burdwan
B.A. 4th Semester
Political Science (Honours)
CC-10; International Organizations
ব্রিকস; গঠন ও সদস্যরাষ্ট্র; লক্ষ্য ও কার্যাবলী, গুরুত্ব , সমালোচনা
ভূমিকাঃ
ব্রিকস হল একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংগঠন। মূলত পাঁচ সদস্যরাষ্ট্রের নামের আদ্যক্ষর নিয়ে এই ব্রিকস শব্দটির জন্ম। ব্রিকস এর প্রধান উদ্দেশ্য হল আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও সহযোগিতার প্রচার করে বিশ্ব মানবতার বিকাশসাধন করা।
স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস
স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস
পেতে চাইলে
সরাসরি WhatsApp করো
8101736209
এই নম্বরে
বিশেষ দ্রষ্টব্য
টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়
গঠন ও সদস্যরাষ্ট্রঃ
ব্রিকস প্রাথমিকভাবে ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত
হয়। শুরুতে এর নাম ছিল । পরবর্তীতেদক্ষিন আফ্রিকা এর সদস্য হলে এর নাম হয়। ২০০৯ সালে
এর প্রথম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং ২০১০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি সংগঠনে
রূপান্তরিত হয়। ব্রিকসভুক্ত দেশগুলি হল- ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিন আফ্রিকা।
ব্রিকস -এর লক্ষ্য বা কার্যাবলীঃ
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক
সহযোগিতা সংগঠন হিসাবে ব্রিকস নিম্নলিখিত কার্যাবলী সম্পাদন করে থাকে। যেমন-
১) অর্থনৈতিক
সহযোগিতা বৃদ্ধিঃ
ব্রিকসভুক্ত
দেশগুলি নিজেদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বানিজ্যিক সহযোগিতার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ
করেছে। এই উদ্দেশ্যে ব্রিকস বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও বানিজ্যিক সহযোগিতার চুক্তির সাথে
সাথে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে তুলেছে। এর মধ্যে- উদ্ভাবন সহযোগিতা,
কাস্টমস
সহযোগিতা; ব্রিকস বিজনেস
কাউন্সিল, কন্টিনজেন্ট রিজার্ভ
চুক্তি এবং নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অন্যতম।
২) উন্নত ও উন্নয়নশীল
দেশগুলোর মধ্যকার বিভেদ হ্রাসঃ
ব্রিকসভুক্ত দেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক
বৈষম্য যথেষ্ঠ বেশি। এই অর্থনৈতিক বৈষম্য ব্রিকসের সাফল্যের পথে অন্যতম অন্তরায়
হতে পারে। ব্রিকস এই অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাসের ব্যাপারে যথেষ্ঠ আগ্রহী। এজন্য
ব্রিকস উন্নয়নশী বা তুলনামূলকভাবে কম উন্নত দেশগুলির প্রতি বেশি অর্থনৈতিক ও
বানিজ্যিক সুবিধা প্রদানের পক্ষপাতী।
৩) সদস্য দেশগুলোর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশঃ
ব্রিকস
তথ্য ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর জোড় দেয়। মূলত অর্থনৈতিক
বৈষম্য হ্রাস, বাণিজ্যগত সহযোগিতা সম্রসারণ, সকল সদস্যরাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়ন
প্রভুতি উদ্দেশ্যে তথ্য ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের কথা বলা হয়।
৪) সদস্যরাষ্ট্রগুলির নিরাপত্তা প্রদানঃ
ব্রিকস
সদস্যরাষ্ট্রগুলির পারস্পরিক নিরাপত্তা এবং ভৌগলিক অখন্ডতা রক্ষার ব্যাপারে
প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য ব্রিকস সদস্যরাষ্ট্রগুলির মধ্যকার পারস্পরিক বিরোধের
শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা বলে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা যাতে বিঘ্নিত
না হয় তারজন্য ব্রিকসভুক্ত দেশগুলি পারস্পরিক সহযোগিতা এবং আলাপ-আলোচনার ওপর জোড়
দেয়।
৫) জণগণের মধ্যে
পারস্পরিক আদানপ্রদানঃ
ব্রিকস সদস্যরাষ্ট্রগুলির জনগণের মধ্যে পারস্পরিক আদান-প্রদান জোরদার করা এবং সংস্কৃতি, খেলাধুলা, শিক্ষা, চলচ্চিত্র এবং যুবসমাজের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বৃদ্ধির কথা বলে। এজন্য ব্রিকস সদস্যরাষ্ট্রগুলির জনগণের মধ্যে যোগাযোগ সহজতর করা, নতুন নতুন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি প্রভূতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। জনগণের মধ্যেকার এই সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াকে সহজতর করার উদ্দেশ্যে ব্রিকস- ইয়াং ডিপ্লোম্যাট ফোরাম, সংসদীয় ফোরাম, ট্রেড ইউনিয়ন ফোরাম, সিভিল ব্রিকস, মিডিয়া ফোরাম প্রভূতি প্রতিষ্ঠা করেছে।
স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস
স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস
পেতে চাইলে
সরাসরি WhatsApp করো
8101736209
এই নম্বরে
বিশেষ দ্রষ্টব্য
টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়
গুরুত্বঃ
ব্রিকসভুক্ত দেশগুলির মোট এলাকা বিশ্বের মোট এলাকার প্রায় ২৫% এবং মোট জনসংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০%। ব্রিকসভুক্ত দেশগুলি হল বিশ্বের সবচেয়ে বিকাশশীল বা উন্নয়নশীল দেশ। এদের সম্মিলিত মোট উৎপাদন হল ২০ ট্রিলিয়ন ডলার। ব্রিকসের প্রতিটি দেশ নিজ নিজ মহাদেশের আঞ্চলিক রাজনীতিতে যথেষ্ঠ প্রভাবশালী এবং সকলে জি-২০ এর সদস্য। ব্রিকসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জিম নিল এর মতে, ব্রিকসভুক্ত দেশগুলির অর্থনৈতিক বিকাশের সম্ভাবনা এতই প্রবল যে ২০৫০ সাল নাগাদ ব্রিকস বিশ্বের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিনত হবে।
স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস
স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস
পেতে চাইলে
সরাসরি WhatsApp করো
8101736209
এই নম্বরে
বিশেষ দ্রষ্টব্য
টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়
সমালোচনাঃ
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ব্রিকসের
উপরিউক্ত গুরুত্বের কথা উল্লেখ করা হলেও এর কিছু গুরুত্ব পূর্ণ ত্রুটি থেকে গেছে
যা ব্রিকস এর সাফল্যের পথে অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এগুলি হল-
১) অর্থনৈতিক
পরিকল্পনার ক্ষেত্রে ব্যর্থতাঃ
ব্রিকসভুক্ত
দেশগুলো নিজেদের মধ্যে অর্থনৈতিক আদাপ-প্রদান বা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সহযোগিতা
সম্প্রসারণের জন্য- মার্কিন ডলারের পরিবর্তে নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহার, আন্তর্জাতিক
মুদ্রা তহবিলে নিজেদের জন্য অধিক ভোটের ক্ষমতা দাবী এবং বিশ্বব্যাংক ও এশিয়া
উন্নয়ন ব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক ব্যাংক প্রতিষ্ঠার কথা বললেও এখনো তা বাস্তবায়িত
করতে পারেনি।
২) সদস্যরাষ্ট্রগুলোর
মধ্যে ঐক্যমত্যের অভাবঃ
ব্রিকসভুক্ত
দেশগুলির মধ্যে মতঐক্যের যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে। অন্যতম সদস্যরাষ্ট্র ভারত ও চীনের
পরস্পর বিরোধী অবস্থান এই সংগঠনের সাফল্যের পথে অন্যতম অন্তরায়। পারস্পরিক সম্পর্ক
ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুকে কেন্দ্রকরে দেশগুলির মধ্যে ঐক্যমত্যের অভাব
দেখা যায়।
৩) সদস্যরাষ্ট্রগুলির
মধ্যে নিরাপত্তার অভাব;
ব্রিকস
একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংগঠন হওয়ায়। সদস্যরাষ্ট্রগুলির নিরাপত্তা
প্রদানের ব্যাপারে তেমন কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি। পরিবর্তে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলির
মধ্যে অস্ত্রপ্রতিযোগিতা, সীমান্ত সমস্যা, পারস্পরিক বিরোধ প্রভূতি
সদস্যরাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে তুলেছে। ফলে সদস্যরাষ্ট্রগুলির মধ্যে
অস্থিরতা বিরাজ করছে।
৪) অভিন্ন স্বার্থের
অভাবঃ
ব্রিকসভুক্ত
দেশগুলির মধ্যে অভিন্ন স্বার্থের অভাব রয়েছে। ব্রিকস-এর নিজস্ব কোন ভূরাজনৈতিক
স্বার্থ নেই। প্রতিটি সদস্যরাষ্ট্র নিজ নিজ স্বার্থে সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়েছে।
পাঁচটি দেশের এই বিপরীতমুখী স্বার্থ ব্রিকসের সাফল্যের পথে অন্যতম অন্তরায় হয়ে
দাঁড়িয়ে আছে। এই পরস্পর বিরোধী স্বার্থের কারনে ব্রিকস নিজস্ব কোনো লক্ষ্যে এগোতে
পারেনি।
৫) নিদিষ্ট নীতি বা
আদর্শের অভাবঃ
ব্রিকসভুক্ত
দেশগুলি নিদিষ্ট কোনো মহাদেশ থেকে উঠে আসেনি। মূলত এশিয়া, আফ্রিকা এবং দক্ষিন
আমেরিকার আঞ্চলিক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী দেশগুলিকে নিয়ে ব্রিকস গঠিত হয়। ব্রিকসের এই
ভূরাজনৈতিক বিভিন্নতার কারনে, ব্রিকস এর মধ্যে নির্দিষ্ট নীতি বা কর্মসূচির অভাব
যথেষ্ঠ প্রকট। প্রাথমিক পর্যায়ে অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারনের লক্ষে ব্রিকস গড়ে
উঠলেও পরবর্তীকালে দক্ষিন অফ্রিকা এই সংগঠনের সাথে যুক্ত হলে এটি রাজনৈতিক চরিত্র
লাভ করে। আবার এটি নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংগঠন না হলেও সদস্যরাষ্ট্রগুলির
নিরাপত্তার ওপর জোড় দেয়।
মূল্যায়নঃ
উপরিউক্ত দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি উদিয়মান শক্তি হিসাবে ব্রিকসের গুরুত্বকে কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায়না। বিশেষ করে ব্রিকস, বিশ্বব্যাংক ও এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক ব্যাংক প্রতিষ্ঠার যে সংকল্প ঘোষনা করে তা আন্তর্জাতিক অর্থনীতিক ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ তাৎপর্যবাহ। যদিও ব্রিকসের সাফল্য নির্ভর করছে তাঁর ঘোষিত কর্মসূচির ভবিষ্যৎ সাফল্যের ওপর।
0 মন্তব্যসমূহ