ন্যাটো,NATO

Ad Code

ন্যাটো,NATO

 

The University of Burdwan

B.A.  4th Semester

Political Science (Honours)

CC-10; International Organizations



ন্যাটোর গঠন, ন্যাটোর ক্ষমতা ও কার্যাবলি, ন্যাটোর সমালোচনা

ভূমিকা;

নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন বা ন্যাটো হল নর্থ আটলান্টিক মহাসাগরের দুই পাড়ে অবস্থিত উত্তর আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা এবং ইউরোপের অধিকাংশ দেশ নিয়ে গঠিত বিশ্বের সবথেকে বড় সামরিক সহযোগিতার জোট। এর মূল লক্ষ্য হলো- পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোকে সোভিয়েত ইউনিয়নের আগ্রাসনের হাত থেকে রক্ষা করা এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সমাজতন্ত্রের বিস্তার রোধ করা।

স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি WhatsApp  করো 

8101736209 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়

গঠন ও কাঠামো;

১৯৪৯ সালের ৪-এপ্রিল ন্যাটো প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদরদপ্তর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস শহরে অবস্থিত। প্রথমে 12টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে ন্যাটো গঠিত হয়। এগুলি হল- বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, আইসল্যান্ড, ইতালি, লুক্সেমবার্গ , নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় আরও বিভিন্ন সদস্যরাষ্ট্র ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত হয়। বর্তমানে ন্যাটোর মোট সদস্য সংখ্যা হল ৩০টি। ন্যাটোর অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রগুলি হলো— অ্যাথেন্স, তুরস্ক, জার্মানি, স্পেন, চেক রিপাবলিক, হাংগেরি, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া,লিথুয়ানিয়া, রোমানিয়া,  স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, আলবানিয়া,  ক্রোয়েশিয়া, মন্টিনিগ্রো, এবং উত্তর মেসিডোনিয়া।

          এছাড়া ইউরোপের যে-কোন দেশ, ন্যাটোর সদস্যপদ গ্রহণ করতে পারে, যদি সেদেশ ন্যাটোর নিরাপত্তা ও সহযোগিতা চুক্তির সাথে সহমত পোষণ করে।

লক্ষ্য ও কার্যাবলী;

ন্যাটো প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের আগ্রাসনের হাত থেকে পশ্চিম বার্লিন এবং ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ন্যাটোর প্রথম মহাসচিব লর্ড ইসমে এর মতে, ন্যাটো গঠনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো রাশিয়ানদের দূরে রাখা, আমেরিকানদের কাছে আসা এবং জার্মানদের দাবিয়ে রাখা। ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী গুলি হল-

১) রাজনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা;

ন্যাটোর মূল উদ্দেশ্য হলো রাজনৈতিক ও সামরিক উভয় দিক থেকে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে উৎসাহিত করে এবং সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস এবং গণতান্ত্রিক উপায়ে সংঘাত নিরসনের উপর জোর দেয়। ন্যাটো শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধের নিষ্পত্তিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও যেখানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে, সেখানে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করবে।

২) সমন্বিত প্রতিরক্ষা;

ন্যাটোভুক্ত দেশগুলি এক বা একাধিক দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণকে, সকল সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ হিসেবে গণ্য করে। উদাহরণ হিসেবে ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাইন ইলেভেন সন্ত্রাসী হামলার পরবর্তী অবস্থার কথা উল্লেখ করা যায়।

৩) ট্রান্স অ্যাটলান্টিক লিঙ্ক;

ন্যাটো উত্তর আমেরিকার সাথে ইউরোপের দেশগুলোর সংযোগ সেতু রচনা করে। উভয় মহাদেশের দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বাতাবরণ তৈরি করেছে। ন্যাটো এটা দেখিয়েছে যে, ইউরোপভুক্ত দেশগুলির নিরাপত্তার সাথে উত্তর আমেরিকার দেশগুলো নিরাপত্তা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত।

৪) অংশিদারিত্ব;

ন্যাটো ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বাইরেও বিস্তৃত পরিসরে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে সক্রিয়। এজন্য ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত নয় এমন 40-টি দেশের সাথে ন্যাটো অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে। এই দেশগুলো ন্যাটোর বিভিন্ন সংলাপে অংশ নেয় এবং ন্যাটোভুক্ত দেশগুলির সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে।

৫) আন্তর্জাতিক সংকট ও বিরোধ নিরসনে অংশগ্রহণ;

ন্যাটো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংকট নিরসনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। যেমন ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধ, ২০০৩ সালে ইরাক সংকট, ২০১২ সালে সিরিয়া সংকট প্রভূতি। এছাড়া ন্যাটো আফগানিস্থান, কসোভো, ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা, আফ্রিকান ইউনিয়ন প্রভূতি আন্তর্জাতিক ঘটনা বা ইস্যুর সাথে নিজেকে সংপৃক্ত করেছে।

ন্যাটো প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন সত্ত্বেও, ন্যাটোর মূল উদ্দেশ্য একই থেকে গেছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটলেও রাশিয়া ন্যাটোকে নিজের বিরুদ্ধে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।

স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি WhatsApp  করো 

8101736209 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়

সমালোচনা;

          ন্যাটো আন্তর্জাতিক সম্পর্কে একটা গুরুত্বপূর্ন্য সামরিক জোট হিসাবে, উপরিক্ত কার্যাবলি সম্পাদন করলেও এর কিছু সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করা যায়। যেমন-

১) নির্দিষ্ট নীতি বা আদর্শের অভাব;

ন্যাটোর মধ্যে নির্দিষ্ট নীতি বা কর্মসূচির অভাব যথেষ্ঠ প্রকট। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলগুলি নিয়ে ন্যাটো প্রতিষ্ঠিত হবার কথা থাকলেও ভূমধ্যসাগরীয় দেশ ইতালি, গ্রীস ও তুরস্ক  ন্যাটোর সদস্যপদ পেয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিম ইউরোপের একটা গুরুত্বপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও জার্মানিকে দীর্ঘদিন ন্যাটোর বাইরে রাখা হয়েছিল।

ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া কথা বললেও ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত নয় কিংবা ন্যাটোর সাথে সম্পর্কিত নয় এমন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ন্যাটো হস্তক্ষেপ করেছে।

২) বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তার পরিপন্থি;

ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা বললেও বিশ্বজুড়ে অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। কারণ মূলত সোভিয়েত বিরোধী সামরিক সংস্থা হিসেবে ন্যাটো কাজ করছে। এরকম পরিস্থিতি সোভিয়েত ইউনিয়নও ইউরোপের কমিউনিস্ট প্রভাবিত দেশগুলিকে একত্রিত করে ন্যাটো বিরোধী সামরিক জোট গঠন করলে বিশ্বজুড়ে একটা বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। বর্তমানে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটলেও ন্যাটোর উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী একই থেকে গেছে। রাশিয়াও ন্যাটোকে নিজের বিরোধী শক্তি বলে মনে করে এবং এর প্রভাব রোধে তাৎপর।

৩) ঐক্যমত্যের অভাব;

ন্যাটোভুক্ত দেশগুলির মধ্যে যথেষ্ট ঐক্যমতের অভাব দেখা যায়। জার্মানিকে ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে  ন্যাটোর অভ্যন্তরীণ বিরোধ চরমে ওঠে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিশনে ন্যাটো ঐক্যমত্যের অভাবে মাঝপথেই মিশন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা প্রদান করা নিয়েও ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ঐক্যমতের অভাব যথেষ্ট স্পষ্ট।

৪) দুর্বল সদস্য রাষ্ট্র;

ন্যাটো যৌথ প্রতিরক্ষা নীতি ঘোষণা করলেও অধিকাংশ সদস্য রাষ্ট্রের কাছে তার করার মত সামরিক বা আর্থিক সামর্থ্য নেই। ন্যাটোর নিজস্ব কোনো সেনাবাহিনী নেই। মূলত সদস্যদেশগুলোর পাঠানো সেনাবাহিনীর উপরেই নির্ভর করে থাকে। কিন্তু এমন কিছু সদস্য দেশ আছে, যাদের সে ক্ষমতাও নেই। কারণ তাদের নিজস্ব কোন সেনাবাহিনী নেই। ন্যাটোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্র তাদের জিডিপির অন্তত ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করবে, কিন্তু বেশিরভাগ সদস্য রাষ্ট্রে এক্ষেত্রেও ব্যর্থ।

৫) গুরুত্বহীন সংস্থা;

যে উদ্দেশ্যে ন্যাটো গঠিত হয়েছিল বর্তমানে সেই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটায় গত কয়েক দশকে ন্যাটোর তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলীর চোখে পড়েনি। তাই অনেকে মনে করেন ন্যাটো এখন অপ্রাসঙ্গিক। ন্যাটোর অন্যতম সদস্যরাষ্ট্র ফ্রান্স ন্যাটোকে একটা অকেজো সংস্থ্যা বলে মনে করেন। এছাড়া খোদ আমেরিকাও ন্যাটোকে নিয়ে তেমন সন্তুষ্ট নয়। আমেরিকা মনে করে ন্যাটোর পেছনে তারা যে অর্থ ব্যয় করছে, ন্যাটো সেই অনুপাতে  সাফল্য এনে দিতে পারছেনা।


মূল্যায়ন;

উপরিউক্ত সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও ন্যাটো আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এখনো যথেষ্ঠ প্রাসঙ্গিক। কারন সোভিয়েত ইউনিয়ন না থাকলেও ইউরোপ তথা আমেরিকার দেশগুলি রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে মুক্ত নয়। সম্প্রতি রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমনের ফলে ন্যাটোর প্রাসঙ্গিকতা আরো বেড়েছে।

স্বল্প মূল্যে এই পেপারের ওপর সমস্ত নোটস 

 পেতে চাইলে

সরাসরি WhatsApp  করো 

8101736209 

এই নম্বরে 

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টাইপ করা নোটস(pdf) দেওয়া হয়

Main Menu




 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code